গত এক মাস যাবত বরগুনা জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে বিকাশ প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পেয়ে আসছিলেন পুলিশ সুপার, বরগুনা।
এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আল মামুন শিকদার ঘটনাগুলো আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে তার নির্দেশে জেলা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতারক চক্রকে সনাক্ত করে।
পুলিশ সুপার, বরগুনার সার্বিক তত্ত্বাবধানে সাইবার ক্রাইম টিম ও জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) যৌথভাবে গত ৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে বরগুনার আমতলী উপজেলার উত্তর টিয়াখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন—
১. মোঃ সুজন (২৬), পিতা-মোঃ নাসির উদ্দিন হাওলাদার, সাং–দেবপুর, ডাকঘর–মাছুয়াখালী, থানা–কলাপাড়া, জেলা–পটুয়াখালী।
২. আব্দুর রহমান (২৫), পিতা–মোঃ দেলোয়ার মুন্সী।
৩. সুমি (২২), স্বামী–আব্দুর রহমান, সাং–উত্তর টিয়াখালী, ডাকঘর–চলাভাঙ্গা, থানা–আমতলী, জেলা–বরগুনা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে যে, তারা দীর্ঘদিন ধরে বিকাশ প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। তারা বিভিন্ন সময় অসুস্থ আত্মীয় বা জরুরি পারিবারিক পরিস্থিতির কথা বলে মানুষের সহানুভূতি অর্জন করে টাকা নিতো।
অভিযানে তাদের কাছ থেকে বিকাশ প্রতারণায় ব্যবহৃত ৫টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রতারিত ভুক্তভোগীদের একজন মোঃ রাকিবুল খান (২৫), পিতা–মোঃ আলতাফ হোসেন, সাং–গাজীপুর, ডাকঘর–আঠারগাছিয়া, থানা–আমতলী, জেলা–বরগুনা। তার বড় ভাই প্রবাসে (দুবাই) অসুস্থ বলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতারকরা বিকাশের মাধ্যমে তার কাছ থেকে ৩৮,০০০ টাকা হাতিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় আমতলী থানায় মামলা নং–০৭, তাং–০৫/১০/২০২৫, ধারা–৪০৬/৪২০ পেনাল কোডে মামলা রুজু করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা একটি আন্তঃজেলা প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য, যাদের বিরুদ্ধে বরগুনা ছাড়াও বিভিন্ন জেলায় একাধিক প্রতারণা মামলা রয়েছে।
আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে এবং চক্রের অন্যান্য সদস্যদের সনাক্ত ও গ্রেফতারে জেলা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল ও গোয়েন্দা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।