বরিশালের বাকেরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী কলসকাঠী যেন আলোর উৎসবে দীপ্যমান। শতবর্ষের এই জগদ্ধাত্রী পূজার মেলায় আলো ঝলমলে বাজার, ধূপধুনোর গন্ধে মুখর পরিবেশ, আর দেবী আরাধনায় নিমগ্ন জনতার ভক্তি—সব মিলিয়ে যেন এক শিল্পরূপে পরিণত হয়েছে তিন দিনের এই উৎসব।
এই পবিত্র উপলক্ষে এফসিএ মাহমুদ হোসেন ফাউন্ডেশন-এর পক্ষ থেকে বিভিন্ন মন্দিরে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। মানবতার স্পর্শে, সহমর্মিতার উষ্ণতায় তিনি যেন সমাজে এক নীরব আলোর প্রদীপ জ্বালিয়ে দিলেন।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বরিশাল জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এ. এবাইদুল হক চান, উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও কলসকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শওকত হোসেন হাওলাদার, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আরিফুল করিম দুলালসহ বিএনপির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ পূজা মণ্ডপগুলো পরিদর্শন করেন। তাদের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের মধ্যে সৃষ্টি হয় আনন্দের তরঙ্গ।
তিনটি সার্বজনীন ও ছয়টি পারিবারিক মন্দিরে অনুষ্ঠিত এই পূজায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগমে কলসকাঠী বাজার পরিণত হয় রঙিন আলোকসজ্জার অপূর্ব নগরীতে। রাতের আঁধারে সেই আলো যেন মানুষের হৃদয়ে ছড়িয়ে দেয় একতার দীপ্তি—যেখানে ধর্ম নয়, মানবতাই হয়ে ওঠে প্রধান আরাধ্য।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমানা আফরোজও উপস্থিত থেকে শতবর্ষের এই ঐতিহ্যের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন। অপরদিকে, শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাকেরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম, বরিশাল জেলা পুলিশের সহযোগিতায়, চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলেন—যেন আনন্দের এই উৎসব কোনো অশুভ ছায়ায় ঢেকে না যায়।
মেলায় সারি সারি দোকানে বিক্রি হচ্ছে নানা পসরা—হস্তশিল্প, খেলনা, মিষ্টান্ন, আর ঐতিহ্যের গল্পে মিশে আছে বাংলার প্রাণ। সবার প্রাণে দাও জাগরণ, ভক্তি ও মমতার সুরে।
মানবিকতায় অনুপ্রাণিত এফসিএ মাহমুদ হোসেন জানান, “ধর্মের ভেদ নয়, মানুষের কল্যাণই আমার ফাউন্ডেশনের উদ্দেশ্য। আমি সর্বদা সমাজ ও সংস্কৃতির পাশে থাকতে চাই।
এইভাবেই কলসকাঠীর জগদ্ধাত্রী পূজা কেবল ধর্মীয় উৎসব নয়—এ যেন ঐক্য, সহমর্মিতা ও সৌহার্দ্যের এক অমলিন প্রতীক, যা বাংলার মাটিতে চিরকাল বেঁচে থাকবে আলোর মতন।